মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কংগ্রেসের প্রথম যৌথ অধিবেশনে তার ভাষণে ঘোষণা করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে শুধু নারী ও পুরুষের লিঙ্গ স্বীকৃতি থাকবে। অন্য কোনো ধরনের লিঙ্গ স্বীকৃতি দেওয়া হবে না।
ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর স্থানীয় সময় মঙ্গলবার কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে এই ভাষণ দেন। এতে তার লিঙ্গ পরিচয় সংক্রান্ত দৃঢ় অবস্থান প্রকাশিত হয়। তিনি বলেন, "আমরা একটি নতুন সরকারি নীতি গ্রহণ করেছি। আমাদের দেশে কেবলমাত্র দুটি লিঙ্গের মানুষ থাকবে—নারী এবং পুরুষ।"
তিনি আরও বলেন, স্কুলগুলোতে "জাতিতত্ত্বের বিষ" দূর করা হয়েছে। এর মাধ্যমে তিনি বোঝাতে চান যে, শিক্ষাব্যবস্থা থেকে "জেন্ডার স্টাডিজ" বা লিঙ্গ পরিচয় সংক্রান্ত বিষয় সম্পূর্ণভাবে অপসারণ করা হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই ঘোষণার মাধ্যমে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে "প্রগতিবাদী" লিঙ্গ ধারণা এবং শিক্ষা পদ্ধতির বিরুদ্ধে তার অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। তিনি ঘোষণা করেছেন যে, স্কুলের পাঠ্যক্রম থেকে লিঙ্গ পরিচয় সংক্রান্ত শিক্ষা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং ভবিষ্যতে এরকম কোনো শিক্ষা প্রচলন করা হবে না।
ট্রাম্প তার ভাষণে আরও বলেন, "আমি বিশ্বাস করি, যেই পেশাতেই আপনি থাকুন—ডাক্তার, আইনজীবী, অ্যাকাউন্ট্যান্ট বা এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার—আপনাকে শুধু মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হবে। আপনাকে পদোন্নতি বা কাজের সুযোগ পেতে হবে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে। লিঙ্গ বা জাতি পরিচয়ের ওপর কোনো ধরনের প্রাধান্য দেওয়া হবে না।"
ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর এলজিবিটিকিউ+ সম্প্রদায়ের প্রতি তার আগের অবস্থানও পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি স্পষ্টভাবে বলেছেন যে, নারী ও পুরুষ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে আর কোনো লিঙ্গের সর্বনাম ব্যবহার করা হবে না।
এছাড়া, ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীতে আর কোনো ট্রান্সজেন্ডার নিয়োগ করা হবে না। তিনি আরও বলেন, সেনাবাহিনীতে যারা ট্রান্সজেন্ডার হিসেবে কাজ করছেন, তাদের জন্য লিঙ্গ পরিবর্তন বা সেই সম্পর্কিত কোনো সুবিধা আর দেওয়া হবে না।
উল্লেখ্য, ট্রাম্প দ্বিতীয়বার হোয়াইট হাউসে প্রবেশ করার পর ২৭ জানুয়ারি একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেন। এতে তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সময়ে রূপান্তরকামীদের জন্য গ্রহণ করা কিছু নীতি পরিবর্তন করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। বাইডেন প্রশাসন রূপান্তরকামীদের জন্য আলাদা লিঙ্গ পরিচয়ের ব্যবস্থা রেখেছিল, কিন্তু ট্রাম্প এখন সেই নীতি ফিরিয়ে নেবেন।