
Wednesday, March 5, 2025

ট্রান্সজেন্ডার বা নারী ও পুরুষ ছাড়া অন্য কোনো লিঙ্গ যুক্তরাষ্ট্রে ঠাই পাবেনাঃ ডোনাল্ড ট্রাম্প
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কংগ্রেসের প্রথম যৌথ অধিবেশনে তার ভাষণে ঘোষণা করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে শুধু নারী ও পুরুষের লিঙ্গ স্বীকৃতি থাকবে। অন্য কোনো ধরনের লিঙ্গ স্বীকৃতি দেওয়া হবে না।
ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর স্থানীয় সময় মঙ্গলবার কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে এই ভাষণ দেন। এতে তার লিঙ্গ পরিচয় সংক্রান্ত দৃঢ় অবস্থান প্রকাশিত হয়। তিনি বলেন, "আমরা একটি নতুন সরকারি নীতি গ্রহণ করেছি। আমাদের দেশে কেবলমাত্র দুটি লিঙ্গের মানুষ থাকবে—নারী এবং পুরুষ।"
তিনি আরও বলেন, স্কুলগুলোতে "জাতিতত্ত্বের বিষ" দূর করা হয়েছে। এর মাধ্যমে তিনি বোঝাতে চান যে, শিক্ষাব্যবস্থা থেকে "জেন্ডার স্টাডিজ" বা লিঙ্গ পরিচয় সংক্রান্ত বিষয় সম্পূর্ণভাবে অপসারণ করা হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই ঘোষণার মাধ্যমে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে "প্রগতিবাদী" লিঙ্গ ধারণা এবং শিক্ষা পদ্ধতির বিরুদ্ধে তার অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। তিনি ঘোষণা করেছেন যে, স্কুলের পাঠ্যক্রম থেকে লিঙ্গ পরিচয় সংক্রান্ত শিক্ষা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং ভবিষ্যতে এরকম কোনো শিক্ষা প্রচলন করা হবে না।
ট্রাম্প তার ভাষণে আরও বলেন, "আমি বিশ্বাস করি, যেই পেশাতেই আপনি থাকুন—ডাক্তার, আইনজীবী, অ্যাকাউন্ট্যান্ট বা এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার—আপনাকে শুধু মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হবে। আপনাকে পদোন্নতি বা কাজের সুযোগ পেতে হবে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে। লিঙ্গ বা জাতি পরিচয়ের ওপর কোনো ধরনের প্রাধান্য দেওয়া হবে না।"
ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর এলজিবিটিকিউ+ সম্প্রদায়ের প্রতি তার আগের অবস্থানও পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি স্পষ্টভাবে বলেছেন যে, নারী ও পুরুষ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে আর কোনো লিঙ্গের সর্বনাম ব্যবহার করা হবে না।
এছাড়া, ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীতে আর কোনো ট্রান্সজেন্ডার নিয়োগ করা হবে না। তিনি আরও বলেন, সেনাবাহিনীতে যারা ট্রান্সজেন্ডার হিসেবে কাজ করছেন, তাদের জন্য লিঙ্গ পরিবর্তন বা সেই সম্পর্কিত কোনো সুবিধা আর দেওয়া হবে না।
উল্লেখ্য, ট্রাম্প দ্বিতীয়বার হোয়াইট হাউসে প্রবেশ করার পর ২৭ জানুয়ারি একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেন। এতে তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সময়ে রূপান্তরকামীদের জন্য গ্রহণ করা কিছু নীতি পরিবর্তন করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। বাইডেন প্রশাসন রূপান্তরকামীদের জন্য আলাদা লিঙ্গ পরিচয়ের ব্যবস্থা রেখেছিল, কিন্তু ট্রাম্প এখন সেই নীতি ফিরিয়ে নেবেন।
আওয়ামী লীগের বিচার না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন হবে নাঃ সারজিস আলম (NCP)
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, খুনি হাসিনা ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য হাজারো ভাইকে হত্যা করতে দ্বিধা করেনি। অনেক ভাইয়ের লাশ এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, "যে ঘটনা আমরা শাপলাতে দেখেছিলাম, শত শত লাশ খুনি হাসিনা ফেলেছিল, কিন্তু লাশগুলো পাওয়া যায়নি।"
মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শহীদদের কবর জিয়ারত ও দোয়া মোনাজাত শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
সারজিস বলেন, "আমরা রাজপথে ছিলাম। আমার যে ভাইয়েরা রাজপথে জীবন দিয়েছে, আমাদের যে মায়েদের চোখ দিয়ে এখনও কান্না আসছে, পানি পড়ছে—আমরা যেন মরার আগে অন্তত খুনি হাসিনার বিচারটা দেখে মরতে পারি। আমরা শুধু আপনাদের কাছে একটা অনুরোধ করতে পারি।"
তিনি আরও বলেন, "আমরা আমাদের জায়গা থেকে মায়েদের পাশে থাকার সর্বোচ্চটুকু দিয়ে চেষ্টা করব।"
এ সময় তিনি আরো বলেন, "যে হাসিনার নির্দেশে এতগুলো হত্যা করা হলো, সেই খুনের বিচার না দেখা পর্যন্ত কীভাবে এদেশের মানুষ ভিন্ন কিছু চিন্তা করে? খুনি হাসিনাকে বাংলাদেশে নিয়ে আসতে হবে, বিচারের মঞ্চে দাঁড়াবে, ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়াবে। শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিচার না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের কোনও মানুষ, কোনও রাজনৈতিক দল ভুল করেও যেন অন্য কোনও কিছু চিন্তা না করে।"
জানা গেছে, আজ বিকেল ৩টার দিকে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নির্বাহী কমিটির পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে পার্টির আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম ও সদস্যসচিব আখতার হোসেনের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন।
উল্লেখ্য, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে বিশাল সমাবেশের মধ্য দিয়ে নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে জাতীয় নাগরিক পার্টি।
প্রধান উপদেষ্টার নতুন সহকারী হলেনঃ শেখ মইনউদ্দিন ও ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দুই নতুন বিশেষ সহকারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত এই দুই ব্যক্তি হলেন শেখ মইনউদ্দিন এবং ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
বুধবার তাদের বিশেষ সহকারী হিসেবে নিয়োগের ঘোষণা জারি করা হয়েছে। শেখ মইনউদ্দিন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করবেন, অন্যদিকে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাবেন। তাদের উভয়কেই এই পদের জন্য প্রয়োজনীয় নির্বাহী ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, বিশেষ সহকারীর দায়িত্ব পালনকালে তারা প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা, বেতন-ভাতা এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবেন।
- সময় এডুকেশন নিউজ
Monday, March 3, 2025
৫ অগাস্টের পরে বর্ণচোরা আওয়ামী লীগ জেগেছে
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রেস মিনিস্টার আকবর হুসাইন লিখেনঃ ৫ অগাস্টের পরে একটা ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর উদয় হয়েছে। এরা আসলে "বর্ণচোরা আওয়ামী লীগ।" কিন্তু পরিবেশ পরিস্থিতির কারণে তারা লজ্জায় সেটা প্রকাশ করতে পারে না। এদের সংখ্যা ৫ পার্সেন্ট হবে। এজন্য তাদের নানা কমপ্লেইন। যেমন ধরেন..
ড্রেনের পানিতে ময়লা কেন? রাস্তায় কুকুর হিসু করে কেন? খাইলে খিদা লাগে না কেন? রাতে না ঘুমাইলে দিনে ঘুম আসে কেন? ইত্যাদি বিষয়! পুলিশ যখন গুলি করে দেদারসে মানুষ মারতো তখন তারা বলতো, ঠিকই আছে! এখন পুলিশ পানি মেরে ছত্রভঙ্গ করলেও তারা বলে - মানবাধিকার গেল গেল! এরা কখনো একেবারের জন্যও বলে নাই, বলবেও না - শেখ হাসিনার বিচার চাই। তাহলে বুঝে নিন তো এরা কারা?
আমর এই পোস্ট দেখার পরে তারা বলবে - আপনি তো প্রেস মিনিস্টার হইছেন। সেজন্য আপনি তো এসব বলবেন। তাদের কথায় মনে হয় - বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম প্রেস মিনিস্টারের পদ সৃষ্টি হইছে!!
প্রেস মিনিস্টারের এই পোস্টের সাথে অনেকেই একাত্ততা পোষণ করে বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন।
- রাজনীতি

রোজা রেখে গেম খেলা যাবে কিনা জেনে নিন Roja Rekhe Game Khela Jabe Kina Jene Nin
রোজা রেখে গেম খেলা যাবে কি?
একটা সাধারণ দিনের থেকে আমাদের রমজান মাসে অনেক কিছু মেনে চলতে হয়। কথা বলার ক্ষেত্রে, খাওয়া দাওয়ার ক্ষেত্রে তেমনি এই গেম খেলা নিয়েও। তবে অনেকেরই এরকম প্রশ্ন থাকে রোজা রেখে গেম খেলা যাবে কি? রোজার মাসে গেম খেললে গুনাহ্ হবে না? আরো নানান চিন্তা ভাবনা মাথায় আসতে থাকে। রমজানের এসব খুটিনাটি চিন্তা ভাবনা রোজা রেখে গেম খেলা যাবে কি এই নিয়ে সব সমস্যা সমাধান করবো।
শরিয়াতে এমন কিছু কাজ আছে যেগুলো রোজা না রাখা অবস্থায় বৈধ কিন্তু রোজা পালনরত অবস্থায় সেগুলো করা নিষেধ। তেমনি রোজা রেখে গেম খেলা যাবে কি এর উত্তরে বলা যায় যে খেলা আল্লাহর স্মরণ থেকে মানুষকে গাফেল রাখে সে সফল প্রত্যেক খেলাই নাজায়েজ। এই খেলা গুলো এর অন্তর্ভুক্ত। যে খেলা রমজান ছাড়া জায়েজ নেই সে খেলা রমজানেও জায়েজ নেই।
রোজার মাস একটি রহমতের মাস। এ মাসে আল্লাহর কাছে যা দোয়া করবেন তাই কবুল হবে। এই রোজার মাসে আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করতে হবে। দিন- রাত তার ইবাদতে মগ্ন থাকতে হবে، কারণ বাকি মাসের চেয়ে এই রোজার মাসে যদি আপনি ইবাদত করেন তাহলে সেটার সোওয়াব অনেক বেশি হয়। কিন্তু আপনি যদি রোজার মাসে সব সময় গেম খেলেন আল্লাহর ইবাদত রেখে তাহলে আপনি রোজার সোওয়াব পাবেন না।
রোজা রেখে গেম খেলা কি হারাম?
রোজা রেখে গেম খেলা যাবে কি বা যদি রোজা রেখে কোনো গেম খেলা হয় তাহলে কি তা হারাম বলে গণ্য হবে? যেকোনো গেম খেলতে খেলতে নামাজ, রোজা, পড়াশোনা, নিজের দায়িত্ব সব ভুলে যান, মনে হয় সেই কাজ এসব তাহলে সেটা হারাম। গেম গুলো আপনাকে দেখায় সবাই আপনার শত্রু। খেলে উঠে আশেপাশের সবাইকে অনেক সময় শত্রু মনে হয়।
আবার রেগে গেলে মনে হয় হাতে কিছু থাকলে গেমের মত সব গুলোকে যদি শেষ করতে পারতাম। যদি মনে হয় রোজা রেখে গেম খেলা যাবে কি বা তা হারাম হবে কি? তাহলে একটু খেয়াল করে দেখবেন এই গেমগুলো খেলতে খেলতে এক সময় আপনার গেম আর বাস্তবতার মধ্যে কোন পার্থক্য মনে হয় না। রোজা রেখে গেম খেলা যাবে কি এই নিয়ে কোরআনে উল্লেখ আছে-
"যে ব্যক্তি দয়াময় আল্লাহর স্মরণ থেকে বিমুখ হয়, আমি তার জন্যে এক শয়তান নাজিল করি। তারপর সে তার সঙ্গী নাই।" ( সূরা যুখরুফ: আয়াত-৩৬) যে কোনো প্রকার জিনিস যা আল্লাহকে বিশ্বাস অথবা তাকে মনে করা অথবা তাকে ভয় করা থেকে আপনাকে ভুলিয়ে রাখে, আল্লাহর উপর বিশ্বাস নষ্ট করে, আপনাকে মানুষ থেকে পশুর মত আচরণ করতে বাধ্য করে তাই হারাম।
কিন্তু এই খেলাটা যদি নিজের নিয়ন্ত্রণে থাকে। সময় নষ্ট না হয়, আপনাকে মারমুখো পশুতে না পরিবর্তন করে এবং অশ্লীলতায় না ডোবায় তা হলে হয়তোবা এটি হারাম নয়। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, আল্লাহ তায়ালা বলেন- 'আদম সন্তান সময়কে গালি দেয়। অথচ আমিই সময় এবং কাল, রাত- দিন আমারই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।( সহীহ মুসলিম হাদিস-৫৬৯৭)
রোজা রেখে কি ধরনের গেম খেলা যাবে
রোজা রেখে গেম খেলা যাবে কি এই মর্মে বলেছি যে ধরনের গেম খেললে আল্লাহ নারাজ হয় সেই ধরনের গেম খেলা উচিৎ নয়। রমজান মাসের প্রতিটি সময় বেশি বেশি কোরআন তিলাওয়াত, জিকির, দোয়া, তওবা ও নফল নামাজের মাধ্যমে কাটানোর চেষ্টা করা প্রত্যেক মুসলিমের জন্য আবশ্যক। মোবাইলে গেমস খেলা মানে নিজের অমূল্য সম্পদ সময়কে অপচয় করা এবং অল্প থেকে ধীরে ধীরে এটা নেশায় পরিণত হওয়া। সুতরাং একজন মুসলিম হিসাবে এ থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।
আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু আনহু তায়ালা বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, 'একজন একজন ব্যক্তির ইসলামের পরিপূর্ণ তার একটি লক্ষণ হলো যে, তার জন্য জরুরী নয় এমন কাজ সে ত্যাগ করে। (জামে তিরমিযী: ২২৩৯) রোজা রেখে গেম খেলা যাবে কি এই নিয়ে আরো বলতে চাই, যেসব কাজ রমজানের বাইরে পাপ ও গুনাহ হিসেবে গণ্য, সেসব কাজ রমজানে করা আরো বেশি মারাত্মক পাপ ও গুনাহ হয়।
আবু হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, 'তোমাদের কেউ সাওম পালন করলে সে যেন পাপাচার লিপ্ত না হয় এবং মূর্খের মতো আচরণ না করে।' (আবু দাউদ, হাদিস :২৩৬৩) গেম খেলা এমনিতেই নাজায়েজ। তবে রোজা রেখে গেম খেলা যাবে কি বা পরবর্তীতেও কোনো গেম খেলা যাবে কি এটা নির্ভর করে আপনার গেমের ধরনের ওপর। যদি সেটা এডুকেশনাল হয় তাহলে সেটা ভিন্ন কথা। এছাড়া রোজা অবস্থায় গেম খেললে ইন্দ্রীয় তৃপ্তি হয়। যা করলে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন রোজা না রাখতে।
রোজা রেখে দাবা খেলা যাবে কি
রোজা রেখে গেম খেলা যাবে কি বা রোজা রেখে দাবা খেলা যাবে কিনা এটা জানার আগে জানতে হবে কোরআনে এ নিয়ে কিছু উক্তি আছে কিনা। কোরআনে দাবা খেলা সম্পর্কে কোন প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ উক্তি পাওয়া যায় না। এরপর নবী (সাঃ) এর হাদিসে কি এ সম্পর্কে কিছু পাওয়া যায়? না পাওয়া যা নি কিছু। তবে হ্যা লুডু খেলা সম্পর্কে নিষেধাজ্ঞা উচ্চারিত হয়েছে হাদিসে।
এক হাদিসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন - "যে লুডু খেলবে সে সুস্পষ্ট আল্লাহ ও তার রাসূলের আনুগত্য হতে বেরিয়ে গেল।" কিন্তু দাবা খেলা সম্পর্কে তিনি কিছুই বলেনি। তবে হ্যাঁ, হযরত আলী (রাঃ) এর একটি উক্তি এক্ষেত্রে পাওয়া যায়। বাইহাকীর সনানুল কুবরা (১০/২১২) এ বর্ণিত আছে যে, হযরত আলী (রাঃ) একবার দাবা খেলার পাশ দিয়ে অতিক্রম কালে বলেছিলেন, 'এসব কিসের মূর্তি যেগুলোর উপর তোমরা উপুর হয়ে আছো।"
এই উক্তিটা সুস্পষ্ট ভাবে অবৈধতা প্রমাণ করে না। আমার বৈধতা ও প্রমাণ হতে পারে না। কারণ এখানে নিছক ভর্ৎসনা থাকলেও এ থেকে বিরত থাকার আদেশ ছিল না। আর শরীয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ মূলনীতি হলো, 'সারিহুন নাস' তথা সুস্পষ্ট উক্তি না পাওয়া গেলে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট বিধান দেওয়া উচিৎ নয়। এজন্য পরবর্তীকালে শরীয়া- বিশেষজ্ঞ বিধানের বিষয়ে মতবাদ করেছেন। অধিকাংশই অবৈধতার পক্ষে এবং বৈধতার তার কক্ষে মতামত দেন।
তবে অনেকেই বলেন যে গেম খেলা মানে সময় নষ্ট করা। যদি সেটি শিখনীয় বিষয়ের হয়ে থাকে তাহলে খেলা যাবে তাও কিছু শর্ত সাপেক্ষে।
১. জুয়া বা হার জিতে টাকার শর্ত থাকতে পারবে না।
২. অবসর সময়ে খেলতে হবে। কাজের সময়ে বা নামাজের সময় খেলা বৈধ নয়।
৩. কোনো রকমের ঝগড়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি করা যাবে না।
মোবাইল বা কম্পিউটার গেম খেলা কি জায়েজ
মোবাইল বা কম্পিউটারে কিছু খেলা রয়েছে, যেগুলো হারাম বিষয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এগুলোর সঙ্গে যদি হারাম কিছুর সংশ্লিষ্টতা থাকে, তাহলে এগুলো খেলা জায়েজ নেই। কিছু খেলা আছে বিনোদনের জন্য বা অবসর সময় কাটানোর জন্য অথবা যেগুলোর সঙ্গে সরাসরি কোনো হারাম বিষয় নেই, তাহলে সেই ধরনের খেলা জায়েজ রয়েছে। ইসলামে যে খেলা গুলো সুস্পষ্ট দলিলের মাধ্যমে হারাম করা হয়েছে, সেগুলো খেলতে পারবেন না।
তার মধ্যে দাবা, কেরাম, তাস খেলা জাতীয় খেলা আপনি খেলতে পারবেন না। তবে এসব খেলার ক্ষেত্রে জুয়ার কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা থাকা যাবে না। যদি জুয়ার সম্পৃক্ততা থাকে, তাহলে হালাল খেলাও হারাম হয়ে যাবে। এটা তখন জায়েজ হবে না। আজকের এই পোস্টে আমি উল্লেখ করে দিয়েছি রোজা রেখে গেম খেলা যাবে কি। আশা করি আপনার উত্তর আপনি পেয়ে গেছেন।
রোজা ভঙ্গের কারণ গুলো কি কি? Roja Vonger Karon

রোজা ভঙ্গের কারণগুলো সাধারণত দুই ভাগে বিভক্ত করা যায়:
১. যেসব কারণে রোজা ভেঙে যায় এবং কাজা ও কাফফারা দুটোই واجب (ওয়াজিব) হয়
যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে নিচের কাজগুলো করে, তবে তার রোজা ভেঙে যাবে এবং তাকে শুধু কাজা নয়, বরং কাফফারাও দিতে হবে:
- ইচ্ছাকৃতভাবে খাওয়া বা পান করা (যে কোনো খাবার, পানি, ওষুধ বা পুষ্টিকর ইনজেকশন গ্রহণ করা)।
- ইচ্ছাকৃতভাবে সহবাস করা (পুরুষ বা নারীর শারীরিক মিলন)।
- ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করে আবার সেটি গিলে ফেলা।
- কোনো বস্তু গলাধঃকরণ করা (যা খাদ্য বা ওষুধ হিসেবে গণ্য হয়)।
👉 কাফফারা: পরপর ৬০ দিন রোজা রাখতে হবে, না পারলে ৬০ জন গরিবকে খাওয়াতে হবে।
২. যেসব কারণে রোজা ভেঙে যায় কিন্তু কাফফারা واجب (ওয়াজিব) নয়, কেবল কাজা করতে হবে
- অজান্তে কিছু খেয়ে ফেলা বা পান করা, পরে মনে পড়ার পরেও খাওয়া চালিয়ে যাওয়া।
- অনিচ্ছাকৃতভাবে বমি করে ফেললে এবং তা পুনরায় গিলে ফেললে।
- নাক বা কান দিয়ে পানি বা ওষুধ পাকস্থলীতে চলে গেলে।
- ইচ্ছাকৃতভাবে রক্ত বের করানো (যেমন, হিজামা, রক্তদান) যদি এতে শরীর খুবই দুর্বল হয়ে পড়ে।
- মহিলাদের হায়েজ (মাসিক) বা নিফাস (সন্তান জন্মের পর রক্তপাত) শুরু হলে।
👉 এক্ষেত্রে শুধু কাজা রোজা রাখতে হবে, কাফফারা দিতে হবে না।
৩. যেসব কারণে রোজা ভাঙে না
- ভুলবশত খাওয়া বা পান করা (মনে না থাকলে রোজা নষ্ট হবে না, বরং আল্লাহর পক্ষ থেকে দান)।
- কোনো কিছু মুখে নিয়ে চিবিয়ে ফেলে দেওয়া (যদি তা গলাধঃকরণ না করা হয়)।
- পানি বা টুথপেস্ট ব্যবহার করে কুলি করা (যদি গিলে না ফেলে)।
- মিসওয়াক বা ব্রাশ করা (যদি টুথপেস্ট না লাগে বা কিছু গিলে না ফেলা হয়)।
- ইচ্ছাকৃতভাবে বমি আসার পর তা গলায় চলে না যায়।
💡 সংক্ষেপে: ইচ্ছাকৃতভাবে খাওয়া, পান করা, সহবাস করা, বা ওষুধ গ্রহণ করলে রোজা ভেঙে যায় এবং কাজা-কাফফারা দুটোই করতে হয়। ভুলবশত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে কিছু হলে শুধুমাত্র কাজা করতে হয়।
📖 তথ্যসূত্র: কুরআন, হাদিস ও ইসলামী ফিকহের বিধান।