
রোজা ভঙ্গের কারণগুলো সাধারণত দুই ভাগে বিভক্ত করা যায়:
১. যেসব কারণে রোজা ভেঙে যায় এবং কাজা ও কাফফারা দুটোই واجب (ওয়াজিব) হয়
যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে নিচের কাজগুলো করে, তবে তার রোজা ভেঙে যাবে এবং তাকে শুধু কাজা নয়, বরং কাফফারাও দিতে হবে:
- ইচ্ছাকৃতভাবে খাওয়া বা পান করা (যে কোনো খাবার, পানি, ওষুধ বা পুষ্টিকর ইনজেকশন গ্রহণ করা)।
- ইচ্ছাকৃতভাবে সহবাস করা (পুরুষ বা নারীর শারীরিক মিলন)।
- ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করে আবার সেটি গিলে ফেলা।
- কোনো বস্তু গলাধঃকরণ করা (যা খাদ্য বা ওষুধ হিসেবে গণ্য হয়)।
👉 কাফফারা: পরপর ৬০ দিন রোজা রাখতে হবে, না পারলে ৬০ জন গরিবকে খাওয়াতে হবে।
২. যেসব কারণে রোজা ভেঙে যায় কিন্তু কাফফারা واجب (ওয়াজিব) নয়, কেবল কাজা করতে হবে
- অজান্তে কিছু খেয়ে ফেলা বা পান করা, পরে মনে পড়ার পরেও খাওয়া চালিয়ে যাওয়া।
- অনিচ্ছাকৃতভাবে বমি করে ফেললে এবং তা পুনরায় গিলে ফেললে।
- নাক বা কান দিয়ে পানি বা ওষুধ পাকস্থলীতে চলে গেলে।
- ইচ্ছাকৃতভাবে রক্ত বের করানো (যেমন, হিজামা, রক্তদান) যদি এতে শরীর খুবই দুর্বল হয়ে পড়ে।
- মহিলাদের হায়েজ (মাসিক) বা নিফাস (সন্তান জন্মের পর রক্তপাত) শুরু হলে।
👉 এক্ষেত্রে শুধু কাজা রোজা রাখতে হবে, কাফফারা দিতে হবে না।
৩. যেসব কারণে রোজা ভাঙে না
- ভুলবশত খাওয়া বা পান করা (মনে না থাকলে রোজা নষ্ট হবে না, বরং আল্লাহর পক্ষ থেকে দান)।
- কোনো কিছু মুখে নিয়ে চিবিয়ে ফেলে দেওয়া (যদি তা গলাধঃকরণ না করা হয়)।
- পানি বা টুথপেস্ট ব্যবহার করে কুলি করা (যদি গিলে না ফেলে)।
- মিসওয়াক বা ব্রাশ করা (যদি টুথপেস্ট না লাগে বা কিছু গিলে না ফেলা হয়)।
- ইচ্ছাকৃতভাবে বমি আসার পর তা গলায় চলে না যায়।
💡 সংক্ষেপে: ইচ্ছাকৃতভাবে খাওয়া, পান করা, সহবাস করা, বা ওষুধ গ্রহণ করলে রোজা ভেঙে যায় এবং কাজা-কাফফারা দুটোই করতে হয়। ভুলবশত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে কিছু হলে শুধুমাত্র কাজা করতে হয়।
📖 তথ্যসূত্র: কুরআন, হাদিস ও ইসলামী ফিকহের বিধান।
0 coment rios: